অন্যান্য

ডায়াবেটিস নিরাময় ও নিয়ন্ত্রন প্রসংগে

  প্রতিনিধি 3 June 2025 , 1:40:56

ডায়াবেটিস নিরাময় ও নিয়ন্ত্রন প্রসংগে

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার মাতুয়াইল উত্তর পাড়ার মোঃ আজিজুর রহমান খান মিন্টু ভাইয়ে পরিক্ষিত পরামর্শ।

 

বাংলাদেশে ডায়াবেটিস জাতীয় রোগে পরিনত হয়েছে। এই রোগ সম্পর্কে মিন্টু ভাই বলেন যে, ডাক্তার দ্বারা এই রোগ নিরাময় ও নিয়ন্ত্রন সম্ভব নয়। কারন ডাক্তারগন নির্দিষ্ট খাবারের উপর সুগারের পরিমান নির্ণয় করিয়া টেবলেট বা ইনসুলিন প্রয়োগ করেন, কিন্তু আপনি কি করছেন?

শর্করা জাতীয় খাবার বেশি খেয়ে ফেলছেন, সুগার বেড়ে যাচ্ছে বা শর্করা জাতীয় খাবার একেবাড়েই খাচ্ছেন না, বা পেটের সমস্যার কারনে ক্ষুধা মন্দায় খেতে পারছেন না, তাই প্রয়োজনীয় সুগার শরীর পাচ্ছেনা বিধায় আপনার সুগার কমে যাচ্ছে, আপনি হাইপোর সম্মুখীন হচ্ছেন (যা খুবই বিপদজনক)। বিষয়টি সম্পূর্ন রোগীকেই অনুধাবন করতে হবে। আর আপনি যদি বিষয়টি অনুধাবন করতে না পারেন তাহলে আপনি দিন দিন দুর্বল হয়ে যাবেন এবং শরীরে বিভিন্ন রোগ বাসা বাধবে ও এটি এমন একটি রোগ যা শরীরের অন্য সকল রোগকেও সহোযোগীতা করে এবং এক সময়ে আপনি ডায়াবেটিসের কাছে নির্মমভাবে পরাজয় বরন করে অল্প বয়সেই জীবন হারাবেন। 

তাই আমি আপনাদের ডায়াবেটিস রোগ নিরাময় ও নিয়ন্ত্রন করার জন্য দুইটি ফর্মুলা অনুসরন করার জন্য অনুরোধ করছি (ডায়াবেটিস নিরাময় হলে আপনি মাংস ও মিষ্টি জাতীয় সকল খাবার স্বাভাবিকভাবে খেতে পারবেন, কিন্তু নিয়ন্ত্রনের ক্ষেত্রে আপনাকে সবসময় ই খাবারের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে) যার মাধ্যমে আমি আমার শরীর থেকে ডায়াবেটিস নিরাময় করেছি। ডায়াবেটিস নির্মুল বা নিরাময় করার জন্য আপনার প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও ডায়াবেটিস সম্পর্কে সামান্য জ্ঞানই যথেষ্ট। ডাক্তারের ঔষধ, খাদ্য দ্বারা ডায়াবেটিস নির্মুল বা নিরাময় করা সম্ভব নয়। যদি কেউ বলে খাদ্য বা ঔষধের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নির্মুল বা নিরাময় করেছি, তা সম্পূর্ন মিথ্যা। ডায়াবেটিস নির্মুল বা নিরাময় করার জন্য শরীর ও পেশী গঠন, ফিটনেস, শাররীক স্টামিনা তৈরী করতে হবে, যা হাটা ও ব্যায়াম ছাড়া কোনভাবেই সম্ভব না। 

 

যাদের বয়স ৭৫ থেকে ৮০ বছর, পর্যাপ্ত পরিমানে হাটা বা ব্যায়াম করা এবং শরীর ও পেশী গঠন, ফিটনেস, শাররীক স্টামিনা তৈরী করা সম্ভব নয় তাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে। এই জন্য এখানে দুইটি ফর্মুলা দেওয়া হলো – 

১. ডায়াবেটিস নিরাময় বা ডায়াবেটিস মুক্ত জীবন (ডায়াবেটিস টাইপ-২ এর জন্য এক বছরের কোর্স, এবং টাইপ-১ এর জন্য দুই বছরের কোর্স)।     

২. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন। 

 

যারা ডায়াবেটিস নিরাময় ও মুক্ত করার চেষ্টা করবেন, তাদের প্রতিদিন ১ ঘন্টার উপরে হাটা ও ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়াম শুরুর আগে শরীরে ভিটামিন B1 B2 B3 B6 B12 এবং ভিটামিন D পর্যাপ্ত পরিমান নিশ্চিত করতে হবে। তাছাড়া প্রেসার, ইলেকট্রোলাইটস ঠিক রাখার জন্য সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে। আস্তে আস্তে নিয়মিত হাটা ও ব্যায়ামের অভ্যাস করতে হবে, যেমন প্রথমে ৩০ মিনিট, এরপরে ৪০ মিনিট ১ মাস।  তারপর ৫০ মিনিট ১ মাস। এইভাবে যখন আপনি ১ ঘন্টার বেশি হাটা ও ব্যায়াম করবেন তখন আপনার ডায়াবেটিস ২ থেকে ৩ মাস পর কোমায় যাওয়া শুরু করবে এবং আপনাকে ডায়াবেটিস নিয়ে আর ভাবতে হবেনা অতিরিক্ত ব্যায়াম করার কারনে আপনার শরীর দুর্বল হয়ে যাবে, তখন আপনার ভাবনা চলে যাবে শরীর সুস্থ রাখার জন্য। আপনাকে একজন ফিজিও মেডিসিন এর পরামর্শ নিতে হবে। ব্যায়াম শুরু করার পর ঔষধ বন্ধ করবেন না, নিয়মিত ২/৩ মাস হাটা ও ব্যায়াম করার পর অবস্থা বুঝে আস্তে আস্তে ঔষধ কমিয়ে খেতে হবে নতুবা হাইপো হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। 

 

ডায়াবেটিস টাইপ-২ রোগীর ক্ষেত্রে

ডায়াবেটিস নিরাময় ও ডায়াবেটিস মুক্ত জীবনের জন্য সময় লাগবে ১ বছর। 

ডায়াবেটিস টাইপ-১ রোগীর ক্ষেত্রে

ডায়াবেটিস নিরাময় ও ডায়াবেটিস মুক্ত জীবনের জন্য সময় লাগবে ২ বছর।

ডায়াবেটিস নিরাময় ও মুক্ত হওয়ার পর মাংস মিষ্টি জাতীয় সকল খাবার খেতে পারবেন, খাওয়া-দাওয়া একবারে স্বাভাবিক থাকবে। 

আপনাকে আমার প্রদত্ত ফর্মুলা ও ডায়াবেটিস এর জন্য প্রয়োগকৃত মেডিসিন সম্পূর্ন ছেড়ে দিতে হবে। কিন্তু শরীর ও পেশী গঠন ফিটনেস স্ট্যামিনা ধরে রাখার জন্য আপনাকে ৩০-৪০মি. হাটা ও ব্যায়াম চলমান থাকবে। 

 

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনের ক্ষেত্রে

আপনাকে প্রদত্ত ফর্মুলা ও মেডিসিন চালিয়ে যেতে হবে এবং প্রতিদিন ৩০-৪০ মিনিট হাটা ও ব্যায়াম করতে হবে। ৪-৫ মাস হাটা ও ব্যায়াম করার পর ধীরে ধীরে ঔষধ কমিয়ে ঔষধ খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে। আপনার খাওয়া দাওয়া নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে। নিয়ন্ত্রনের ক্ষেত্রে আমার প্রদত্ত ফর্মুলার ২ ও ৩ নম্বর পদ্ধতি খাওয়া অত্যাবশ্যকীয়। ফর্মুলার ১ ও ৪ নম্বর পদ্ধতি খেলে ভালো, না খেলে অসুবিধা নেই। 

 

আমার শরীরে প্রথম ডায়াবেটিস ধরা পড়ে ২০১৬সালে। ডায়াবেটিস ধরা পড়ার পর আমি মোবাইলে ইন্ডিয়ার বিভিন্ন ইন্টারনেট চ্যানেলে গুগল ডিসকোভারিতে বিভিন্ন মসলা ও ফ্রুটসের উপর তারা নিয়মিত উপকারিতা ও অপকারিতে নিয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত প্রদান করে। 

 

অতঃপর আমি এই সকল পদ্ধতি নিজে মিশ্রন করে খাওয়া শুরু করি। যার ফলে আমি আজ সম্পূর্ন ডায়াবেটিস মুক্ত এবং আমার খাওয়া দাওয়া একেবারেই স্বাভাবিক। দই, মিষ্টি, মাংস আল্লাহর অশেষ রহমতে সবই খাই। আমার সুগার রেড লেভেল অতিক্রম করেনা।   

আমি দেশের সমস্ত ডায়াবেটিস রোগীর কাছে বিনীত অনুরোধ করছি, আপনারা আমার এই পদ্ধতি অনুসরন করে ডায়াবেটিস মুক্ত জীবন যাপন করুন এবং সুস্থ সবল দীর্ঘ আয়ু লাভ করুন। 

খাবার প্রস্তুত ও নিয়ম 

১) রাতে ৫/৬ টি কিসমিস ধুয়ে হাফ গ্লাস খাবার জলে ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে ভিজানো জলে কিসমিস আঙ্গুল দিয়ে ঢলে পানিতে মিশিয়ে ছেকে কুসুম গরম করে পান করুন। (কিডনি রোগীরা সতর্কতা অবলম্বন করবেন)

 

৫ মিনিট পর….

২) রাতে আরেক পাত্রে হাফ গ্লাস পানিতে মেথি, মৌরি, জোয়ান, কালোজিরা টি চামুচের দেড় চামুচ করে খাবার জলে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর সকালে ভিজানো জলে কুসুম গরম করে ভালোভাবে নেড়ে ও ছেকে টি চামুচের ১/৪ (চার ভাগের ১ ভাগ) হলুদ গুড়া মিশিয়ে পানি নরমাল করুন। তারপর লেবুর (চার ভাগের ১ ভাগ) রস মিশিয়ে দুইটি দেশি রসুনের কোয়া মুখে দিয়ে এই জলের সাথে রসুনের কোয়া চিবিয়ে পান করুন। (সতর্কতা- পায়খানা পাতলা হওয়া, ভিজল যাওয়া, দিনে ৫/৬বার পায়খানা হওয়া, সেক্ষেত্রে টি-চামুচের ১/২ (হাফ চামুচ) করে ১০দিন, ১ চামুচ করে দশদিন, তারপর দেড় চামুচ করে মিশিয়ে খাবেন) 

 

৫ মিনিট পর….

৩) আদা কুচি ১ইঞ্চি পরিমান, দারচিনি ১ইঞ্চি পরিমান, তেজপাতা ১ টি বড় সাইজ, এলাচ ২ পিছ, কালো গোল মরিচ ২ পিছ, লবঙ্গ ২ পিস (লিভারের রোগীরা লবঙ্গ খাবেন না) এই সমস্ত উপাদান দেড় গ্লাস জলে ৭/৮ মিনিট জ্বাল দিন, সকালে ঘুম থেকে উঠে জ্বাল দেওয়া শুরু করুন এবং কিসমিস পানি পান করার ৫মিনিট পর মেথি, জোয়ান, মৌরি, কালোজিরা পানি পান করুন তার ৫ মিনিট পর আদা মিশ্রিত পানি নরমাল করে লেবুর ১/৪ ( চার ভাগের ১ ভাগ) রস মিশিয়ে পান করুন। 

 

৩০ মিনিট পর 

৪) রাতে একটি পাত্রে চারটি কাঠ বাদাম, চারটি আখরোট, হাফ মুটো ছোলা ভিজিয়ে রাখুন। অন্য আরেকটি পাত্রে ২টি খেজুর ১০/১৫ মি.লি. পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখুন। ১টি পেয়াজ কুচি, 

পরিমিত কাচা মরিচ, বাদাম, আখরোট, ছোলা সাথে মিশিয়ে খান। তারপর ১টি সিদ্ধ ডিম খান। তারপরে ২টি রুটি (লাল আটা হলে ভালো হয়) (খেজুর ও খেজুরের ভিজানো পানি দিয়ে খান)

(সতর্কতা- কিডনী রোগীরা সতর্কতা অবলম্বন করবেন) 

এই সমস্ত পদ্ধতি নিয়মিত খেলে আপনার শরীরের যে সমস্ত সমস্যা দূর হবে- গ্যাস্ট্রিক, বিষাক্ত টক্সিন, পেটফোলা, পেটফাপা, ক্ষুধামন্দা, বদহজম, আমাশয় (এক মাস পর থেকে ফল পাবেন) (এলার্জীর জন্য ৬ মাস থেকে ১বছর খেলে ভালো ফল পাবেন) হাটু ব্যথা, জয়েন্টে ব্যথা, পেশী ব্যথা (৬ মাস খাওয়ার পর থেকে ফল পাবেন), উচ্চরক্তচাপ (দেড় দুইমাস খাওয়ার পর থেকে নিয়ন্ত্রনে আসবে) ঘন ঘন ঠান্ডা লাগা, স্বর্দি, কাশি, এজমা এছাড়াও হার্ট, লিভার, ফুসফুস, কিডনী এন্টি বায়োটিক হিসেবে কাজ করবে। ফেটি লিভার, লিভারের টক্সিন, ওজন, অতিরিক্ত মেদ ও অবাঞ্ছিত চর্বি দূর করার সহোযোগীতা করবে। ইহাতে আছে মেলাটোনিন ও সেরোটোনিন হরমোন, যা আপনার ঘুমের সমস্যা দূর করবে। 

 

এই কোর্স চলাকালীন সময়ে যা নিয়মিত খাবেন- 

মসুর ডাল, মুগ ডাল, বুটের ডাল ভূনা খেতে হবে, প্রতিদিন যেকোন ১টি, ১ বেলা, লিকুইড ডাল খাওয়া যাবেনা। 

টকদই – প্রতিদিন টেবিল চামুচের দুই চামুচ

সবজি – কাটলে যে সকল সবজি সাদা বের হয় 

লেবু – এলার্জী নিয়ন্ত্রনের জন্য প্রতিদিন ১টি করে লেবু খেতে হবে এবং দৈনন্দিন শরীরের শক্তি জোগাবে। 

ডাব ও ওরস্যালাইন- ইলেকট্রলাইট ও প্রেসার বাড়ানোর জন্য, প্রেসার মেপে দুই একদিন পর পর ওরস্যালাইন খেতে হবে। 

ফলঃ সব রকমের ফল খাওয়া যাবে। খাবার খাওয়ার দুই থেকে আড়াই ঘন্টার পর। রাতে ফল খাওয়া যাবেনা, তবে যাদের ওজন কম, তারা একটি করে কলা খেতে পারবেন। 

ফল খাওয়ার সময় পানি বা লিকুইড জাতীয় কিছুই খাওয়া যাবেনা। যাদের গ্যাস্ট্রিকে সমস্যা আছে তারা খাবার খাওয়ার ১ঘন্টা আগে ও ১ ঘন্টা পরে জল পান করবেন। রাতের খাবার ৮টার মধ্যে খাওয়া শেষ করুন এবং খাওয়ার দেড় ঘন্টা পরে ১ গ্লাস জল পান করুন। রাতে আর পানি পান করা যাবেনা। সপ্তাহে দুই একদিন মুরগীর মাংস খান।   

এই কোর্স চলাকালীন সময়ে যা যা খাবেন নাঃ

গরুর মাংস, খাসির মাংস, মহিষের মাংস, চিনি, গুড়, অতিরিক্ত তৈল, ময়দা তৈরী, সকল প্রকার কনফেকশনারী আইটেম, সকল প্রকার বিস্কুট, চানাচুর, এবং তৈলে ভাজা জাতীয় সকল খাবার। আলু, মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়া, গাজর, ওল কচু, কচুর মুখী, কচুর লতী, কচুর মোথা (খেলেও  দিনে যেকোন একটি ৫০ গ্রামের বেশি নয়), তা ছাড়া যে সকল সবজি কাটলে রঙিন বের হয় (টমেটো ছাড়া) এবং মাটির তলের সকল সবজি (মুলা ছাড়া) খাওয়া যাবেনা। 

খাবার খাওয়ার আড়াই ঘন্টা পর থেকে তিন ঘন্টার মধ্যে হাটা ও ব্যায়াম শুরু করুন। খাবার খাওয়া সাড়ে চার ঘন্টা পর থেকে ভুলেও হাটতে যাবেন না। খালিপেটে সকালে হাটতে যাবেন না। প্রয়োজনে কিসমিস পানি ও বাদাম, আখরোট, ছোলা খেয়ে হাটতে যান।  

 

এই সকল প্রনালী মেনে নিয়মিত হাটা ও ব্যায়াম করলে ইন শা আল্লাহ আপনি ডায়াবেটিস থেকে চিরমুক্তি লাভ করতে পারবেন এবং শুধু তাই নয়, আপনার শরীর সকল রোগের এন্টিবডি হিসেবে গড়ে উঠবে। যারা এই প্রনালী কোর্স শুরু করবেন, তারা দুই একদিন পর পর হাইপোর জন্য আমার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলবেন। আপনি ভালো থাকুন, অন্যকে ভালো থাকার সহযোগীতা করুন। 

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ